ভিট বালুর আড়ালে সিলিকা বালু উত্তোলনের অভিযোগ
ধোপাজান নদীতে ভিট বালু উত্তোলনের অনুমতি বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন
- আপলোড সময় : ১৬-১০-২০২৫ ০৮:১০:১৪ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ১৬-১০-২০২৫ ০৮:১০:১৪ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার ::
ধোপাজান-চলতি নদীতে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) কর্তৃক লিমপিড ইঞ্জিনিয়ারিং-কে ‘ভিট বালু’ উত্তোলনের অনুমতি দেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১ টায় সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার রামপুর গ্রামের পাশে ধোপাজান নদীর তীরে স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণ এই মানববন্ধনের আয়োজন করেন। মানববন্ধনে নদী তীরবর্তী গ্রামগুলোর শতাধিক মানুষজন অংশ নেন।
মানববন্ধনে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা ইঞ্জিনচালিত বালু উত্তোলনকারী শ্রমিক সমবায় সমিতির সভাপতি মো. মুমিনুল হকের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি এ কে এম আবু নাছার, সদর উপজেলা ইঞ্জিনচালিত নৌকা বালু উত্তোলনকারী শ্রমিক সমবায় সমিতির সভাপতি হাফিজুর রহমান, বারকি শ্রমিক সমবায় সমিতির সেক্রেটারি নাসু মিয়া, বালু পাথর ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান, শ্রমিক নেতা আমিরুল হক প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা অবিলম্বে ভিট বালু উত্তোলন করার অনুমতি বাতিলের দাবি জানান। একইসাথে ভিট বালু উত্তোলনের নামে সিলিকা বালু উত্তোলন বন্ধ করতে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। বক্তারা বলেন, ড্রেজার ব্যবহার করে বালু উত্তোলন সরকারিভাবে অবৈধ হওয়া সত্ত্বেও লিমপিড কোম্পানি কীভাবে নদীতে ড্রেজার চালাচ্ছে। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে এই অবৈধ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ তুলেন বক্তারা।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে আরও বক্তারা বলেন, খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে অবগত নয়। ‘ভিট বালু’র জন্য তিতাস ও সুরমার মতো নদী থাকা সত্ত্বেও লিমপিড ধোপাজান নদীতে ভিট বালু উত্তোলনের নামে সিলিকা বালু লুট করতে এসেছে। বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, শরীরে এক বিন্দু রক্ত থাকতে নদীতে ড্রেজার চলতে দেওয়া হবে না এবং প্রয়োজনে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে ড্রেজার তুলে নেওয়া হবে।
বালু পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নুরুজ্জামান বলেন, গত ৭ বছর ধরে লিজ বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা বেকার। ড্রেজার দ্বারা দিনে দুপুরে বালু তোলা নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও লিমপিড কোম্পানি কিভাবে অনুমতি পায়? দ্রুত এই অনুমতি বাতিল করতে হবে, নতুবা দু’পারের মানুষ এক হয়ে তা প্রতিহত করবে।
আলী নুর নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ২০১৮ সাল থেকে ধোপাজান নদীর ইজারা বন্ধ। লাখ লাখ শ্রমিক বেকার। খনিজ মন্ত্রণালয়ের আইন অমান্য করে ‘ভিট বালু’র নামে ‘সিলিকা বালু’ লুট করে সবাইকে ধোঁকা দেওয়া হচ্ছে। বালু ব্যবস্থাপনা ও মাটি আইন অনুসরণ করা হয়নি। নীতিমালা না মেনে একটি মহলের মাধ্যমে নদী থেকে ফায়দা হাসিল করা হচ্ছে। তিনি বলেন, শ্রমিকদের স্বার্থে নদীর ইজারা দিতে হবে এবং সিলিকা বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে রক্ত ঝরিয়ে হলেও নদী রক্ষা করা হবে।
সুনামগঞ্জ পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি এ কে এম আবু নাছার বলেন, খনিজ স¤পদ মন্ত্রণালয়ের ২০১৮ সাল থেকে নদীর ইজারা বন্ধ থাকলেও ইদানীং লিমপিডকে অবৈধভাবে বালু তোলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বালু ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন অনুযায়ী তারা প্রায় ১ কোটি ঘনফুট বালু নিয়ে গেছে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, নদীতে ড্রেজার চলতে থাকলে এলাকার বাড়িঘর ভেঙে যাবে, আর যদি বাড়িঘর ভেঙে যায় এর দায় প্রশাসনকে নিতে হবে। তিনি সনাতন পদ্ধতিতে বালু উত্তোলনের অনুমোদন দেওয়ার দাবি জানান, যাতে সরকার রাজস্ব হারানো থেকে রক্ষা পায় একইসাথে যাতে নদীর দু’পারের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ

স্টাফ রিপোর্টার, দৈনিক সুনামকণ্ঠ